শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০২:৫১ অপরাহ্ন

তিস্তার ১৬ চরে রকমারি ফসল

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তার চরগুলোতে রকমারি জাতের ফসল আবাদ হচ্ছে। এবার চরগুলোতে ৪০ কোটি টাকার ফসল পাওয়া যাবে, আশা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এসব চরের বেলে-দোআঁশ মাটিতে স্বল্প খরচে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১ হাজার হেক্টর।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানায়, ডিমলার ঝুনাগাছ চাপানি, খালিশা চাপানি, গয়াবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি, পশ্চিম ও পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নে চরের সংখ্যা ১৬টি। যার সবই আবাদযোগ্য। চলতি মৌসুমে এসব চরে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে ফসল উৎপাদন হচ্ছে। যা গতবারের চেয়ে ১ হাজার হেক্টর বেশি। এসব চরে চাষ করা হচ্ছে- ভুট্টা, আলু, কাঁচা মরিচ, পিঁয়াজ, রসুন, মিষ্টি কুমড়া ও লালশাকসহ নানা ধরনের রবিশস্য। পাশাপাশি প্রস্তুতি চলছে গম, ছোলা, মসুর, সরিষা ও বাদাম চাষের। চরের কৃষক আমিনুর রহমান বলেন, সারা বছরই চরের জমিতে ২০ থেকে ২৫ ধরনের ফসল চাষ করা হয়। বন্যার পর চরের মাটিতে পলি জমে। এ কারণে সার খুব একটা লাগে না। পোকামাকড়ের আক্রমণও কম। কীটনাশকের ব্যয় তেমন নেই। তাই ফসল উৎপাদনে খরচও কম। দোহলপাড়া চরের কৃষক আবদুর রশিদ বলেন, চরের জমিতে বিশেষ করে ভুট্টা, আলু, বাদাম এবং পিঁয়াজ চাষ করা হচ্ছে। চরের প্রতি শতক জমিতে প্রায় দুই মণ করে ভুট্টা উৎপাদন হয়। এতে উৎপাদন খরচের চেয়ে লাভ হয় তিনগুণ। বালুচরে এ পরিমাণ আবাদ হওয়ায় বন্যায় চরাঞ্চলের মানুষ ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে লাভবান হতে পারে। চর কিসামতের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, সব রকমের কৃষিপণ্য চরের জমিতে উৎপাদন হয়। কিন্তু যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় কৃষকরা পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশাল চর আর নদী পাড়ি দিয়ে ফসল নিয়ে যেতে হয় হাটে। ফলে উৎপাদন বেশি হলেও ব্যয়ও বৃদ্ধি পায় পরিবহনে। হাট থেকে এক বস্তা সার কিনে চরে পৌঁছাতে অতিরিক্ত খরচ হয় ১০০ টাকা। আবার চরের ফসল ডাঙ্গায় নিতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় তাদের। চরাঞ্চলে উৎপাদন করা কৃষিপণ্য সংরক্ষণ, বিপণন ও নদী খনন করে তিস্তার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান স্থানীয়রা। ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নত বীজে বদলে গেছে তিস্তা চরের কৃষি চিত্র। চরের পতিত জমিতে যে ভুট্টা উৎপাদন হচ্ছে, তা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া চরে আলু, পিঁয়াজসহ প্রায় সব ধরনের মশলাজাতীয় পণ্য ব্যাপকভাবে উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি বছর তিস্তার উজানের ঢলে জমিতে পানি প্রবেশ করে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই এলাকার চাষীদের সরকারি কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় আনা হচ্ছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর যেসব চর কিছুদিন ডুবে থাকে, সেখানে পানি সহনীয় জাতের ধান চাষে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে চরে আবাদযোগ্য জমি বৃদ্ধি পেয়েছে। ()

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335